মহাবিশ্ব ও কক্ষপথ নিয়ে পবিত্র কোরআনের ব্যাখ্যা ।।

কিছু ভুতুড়ে জাহাজের পরিচিতি

আজ হঠাত মহাবিশ্ব নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে, কারন টা হচ্ছে মসজিদে হুজুরের ওয়াজ শুনেছিলাম এ প্রসঙ্গে। এসে নেটে সার্চ করতে থাকলাম পড়লাম এর এখন আপনাদের শেয়ার করছি। আসলে এক্ষেত্রে ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে আসুন সবাই একটূ জানি। যে যেমনি করিনা কেন আমরা সবাই কিন্তু আল্টিমেটলি বিধাতায় বিশ্বাস করি।। সুতরাং তার এই রহস্যময় মহাবিশ্ব নিয়ে পবিত্র কোরআন এর ভাষাই শুনি।

planet18 (1)

পরম করুণাময় আল্লার অদ্ভুত সৃষ্টি এই মহাবিশ্ব (Universe)। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাফল্যকে চরম সাফল্য আকারে প্রকাশের প্রবনতা রয়েছে মানুষের মধ্যে। অথচ আকাশের বিশালতার কাছে পৃথিবীর মানুষ বড় অসহায়- পরম করুণাময় আল্লার মহাবিশ্বের সীমানা স্পর্শ করা তো অনেক দূর মহাবিশ্ব সম্পর্কে খুবই সামান্য জানার সুযোগ হয়েছে মানুষের।

আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান মহাকাশ সম্পর্কিত কিছু নির্ভুল তথ্য বিগত কয়েক দশকে জানতে (Discover) সক্ষম হয়েছে অথচ এই সৃষ্টির কথা বিভিন্ন ভাবে বহু বার আল্লাহ পবিত্র কোরআনে আরও নির্ভুল ভাবে উল্লেখ করেছেন যা আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। যুগ যুগ ধরে কোরআনের অবিকৃত বাণী সমূহ আধুনিক বিজ্ঞানীদের আবিস্কারের সাথে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ রাখেনি। অথচ কিছু সংখ্যক লেখক ও বিজ্ঞানী কোরআনে উল্লেখিত মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কিত বাণী সমূহের অপব্যখ্যার চেষ্টা করেন।

প্রথমেই আমাদের সৌরজগতের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। পৃথিবী সহ সৌর জগতের প্রতিটি গ্রহ সূর্যের চারদিকে নিজস্ব কপথে চলমান এবং সূর্যেরও একটি নিজস্ব কপথ আছে যা সর্বজন স্বীকৃত। এর উল্লেখ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ এভাবে করেছেন Ñ

“আর তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র সবাই নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরন করে” (সূরা আল আম্বিয়া, আয়াত – ৩৩)

এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ নিশ্চিত করেছেন যে শুধু চন্দ্র, পৃথিবী বা সৌর জগতের অন্যান্য গ্রহগুলোই নয় সূর্যেরও একটি নিজস্ব কক্ষপথ রয়েছে। বিগব্যং থিওরী অনুযায়ী মহা বিষ্ফোরনের মাধ্যমে শূন্য (zero volume) থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির মূহুর্ত থেকেই কেন্দ্রের বিপরিত দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে এর মাধ্যমে সন্ধেহাতিত ভাবে প্রমান করে সূর্য তার সৃষ্টি কালীন কেন্দ্রের বিপরিত মূখী ধাবমান।

জ্যোর্তিবিজ্ঞানীদের হিসাব মতে সূর্য তার নির্দিষ্ট গন্ত্যব্যের দিকে প্রচন্ড গতিতে (enormous speed) প্রতি ঘন্টায় ৭ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার যা ২৪ ঘন্টা বা ১ দিনে ১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার কিলোমিটার পথ ছুটছে। সূর্যের এই অবিশ্বাস্য নিজস্ব গতির পাশাপাশি নিখুত ভাবে গ্রহ এবং উপগ্রহ গুলো তাদের মধ্যাকর্ষণ শক্তি (gravitational system of the sun) বজায় রেখে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে থেকে কক্ষপথ পরিভ্রমন করছে এবং একই গতি নিয়ে সূর্যের সাথে ছুটছে। এই গতি নিয়ে সৃষ্টির শুরু থেকে কোটি কোটি বছর ছুটতে থাকা মহান স্রষ্টার সৃষ্টি কতটা বিশাল হতে পারে আর মানুষ ও তার চিন্তা শক্তি কতো সীমাবদ্ধ হতে পারে তাই প্রমান করে।

সুর্য তথা মহাবিশ্বের এ অবস্থাকে পবিত্র কুরানে আল্লাহ এভাবে উল্লেখ করেছেন

“আর সুর্য স্বীয় গন্তব্য স্থানের দিকে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ” (সূরা ইয়াসিন, আয়াত – ৩৮) 

 

সূর্য মিল্কিওয়ে ছায়াপথের অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি অংশ। জ্যোর্তিবিজ্ঞানীদের হিসাব মতে মিল্কিওয়ে ছায়াপথে সূর্যের চাইতে ছোট ও হাজার গুণ বড় মিলিয়ে ২০০ বিলিয়ন নত্র আছে। প্রতিটির আবার সূর্যের ন্যয় গ্রহ উপগ্রহ এবং ধুমকেতু রয়েছে । এ জাতীয় ২০০ বিলিয়ন ছায়াপথ নিয়ে মহাবিশ্ব পরিবার। প্রত্যেকটি ছায়াপথের কেন্দ্রের বিপরিত মূখী গতি ও নিজস্ব কক্ষপথ রয়েছে যা লাখ লাখ বছর ধরে পরিভ্রমন করছে। প্রত্যেকটি ছায়াপথের কক্ষপথ এত নিখুত ভাবে তৈরী যে সুদীর্ঘ সময় ধরে চলার পথে একটার সাথে অন্যটার সংঘর্ষ লাগার কোনো নজির নেই।

 

1357536091

 

আধুনিক টেলিস্কোপ আবিস্কারের ফলে আমরা জ্যোর্তিবিজ্ঞানীদের মাধ্যমে এ সকল তথ্য জানতে পারছি কিন্তু পবিত্র কোরআন নাজিলের সময় পর্যবেক্ষনের জন্য মানুষের হাতে এ সব আধুনিক যন্ত্রপাতি ছিলোনা সেখানেও আল্লাহ তার নিজস্ব বাণীর সত্যতার প্রমাণ রেখেছেন ছায়াপথ সম্পর্কে একটি আয়াতে

 

“কসম বহুপথ বিশিষ্ট আসমানের” (By the sky full of paths and orbits.) (সূরা আযযারিয়াত আয়াত – ৭)

আকাশের দিকে তাকালে মানুষের মনে ক্ষুদ্রতার অনুভূতি জাগে। আল্লার সৃষ্টি কতো বিশাল তার প্রমান পাওয়া যায়। এমন একটি ক্ষেত্র আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন যা মানুষের পক্ষে শত কোটি বছর ধরে গবেষনা চালিয়ে গেলেও এর কোনো কুল কিনারা খুঁজে পাওয়া যাবেনা। মানুষের চিন্তা ভাবনার পরিধি বা শক্তি সামর্থ আল্লার সৃষ্টির কাছে কতো অসহায় তা অনুভব করার জন্যই এত আয়োজন তবুও মানুষ আত্মসমর্পন করুক আল্লাহর কাছে । সন্ধেহবাদী ও অবিশ্বাসীদের আল্লার অনুকুলে আত্মসমর্পনের সুযোগ গ্রহনের পূর্বেই হয়তো মহাবিশ্বের ধ্বংস কার্য শুরু হয়ে যাবে – কেয়ামতের মাধ্যমে শুরু হবে আল্লাহর সৃষ্টি প্রক্রিয়ার আরেকটি অধ্যায়।

Related posts

Leave a Comment